প্রায় সকল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম দিন দিন বেড়ে চলেছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে জ্বালানির দামও। যাদের গাড়ি আছে বা গাড়ি চালাতে হয়, ব্যাপারটা তাদের জন্য খুবই দুশ্চিন্তাজনক। কারণ দাম যতই বাড়ুক, যেহেতু জ্বালানি ছাড়া গাড়ি চালানো অসম্ভব তাই দৈনন্দিন খরচে বাড়তি চাপ পড়লেও জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। জ্বালানির এই দাম বেড়ে চলা আমরা কমাতে না পারলেও সহজ কিছু উপায়ে, বাড়তি কিছু সতর্কতা অবলম্বনে কমিয়ে ফেলা সম্ভব জ্বালানির অতিরিক্ত খরচ। এর জন্য এমনভাবে গাড়ি ব্যবহার করতে হবে যাতে খুব বেশি বাড়তি জ্বালানি অপচয় না হয়।
আজ আমরা কথা বলব এমন সহজ কয়েকটি উপায় নিয়ে যা আপনাদের গাড়ির জ্বালানি খরচ কমাতে সহায়তা করবে।
১। গাড়ির এয়ার ফিল্টার পরিচ্ছন্ন রাখুন
গাড়ির এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার থাকলে তা তেল সঞ্চয় করতে সাহায্য করে। তাই জ্বালানি বাঁচাতে চাইলে নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন গাড়ির এয়ার ফিল্টার। কারণ এয়ার ফিল্টারে ময়লা জমলে ইঞ্জিনে বাতাসের সরবরাহ কমে যায়। এতে ইঞ্জিনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। আর এ অবস্থায় গাড়ি চালালে জ্বালানি খরচও হয় বেশি। তাই জ্বালানির খরচ কমাতে এক সপ্তাহ পরপর গাড়ির এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করে
ফেলুন। আর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত চালানোর পর গাড়ির এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করা খুবই জরুরী। জ্বালানি খরচ কমাতে এই ব্যাপারটিও গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখুন।
২। গতি নিয়ন্ত্রণ করে অপ্রয়োজনীয় ব্রেক করা থেকে বিরত থাকুন
আমাদের অনেকেরই কিন্তু গতি নিয়ন্ত্রণ না করে হুটহাট ব্রেক করার অভ্যাস রয়েছে। তবে আপনি কি জানেন, গতি নিয়ন্ত্রণ না করে হুটহাট ব্রেক করলে তা ইঞ্জিনের উপর চাপ ফেলে। আর এই ইঞ্জিনের উপর চাপ পড়ার ফলে বেড়ে যায় জ্বালানির খরচও। তাই যদি জ্বালানির বাড়তি খরচ কমাতে চান তাহলে নিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালান এবং হুটহাট অপ্রয়োজনে ব্রেক করা থেকে বিরত থাকুন। নিয়মিত এই কাজ থেকে বিরত থাকলে জ্বালানি খরচ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারবেন। আর সাথে কমবে আপনার বাড়তি দুশ্চিন্তাও।
৩। টায়ারে বাতাসের প্রেশার ঠিক রাখুন
গাড়ির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ টায়ার। আর টায়ারে বায়ুর চাপ সবসময় ঠিক রাখতে হয়। কারণ টায়ারে বাতাসের চাপ কম থাকলে তখন ইঞ্জিনকে কাজ করতে হয় বেশি। এর ফলে গাড়ির মাইলেজ খারাপ হয়ে যায়। আর ইঞ্জিনের মতো আপনার গাড়ির টায়ারেরও জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষমতা রয়েছে। আর টায়ারে বাতাসের প্রেশার যদি ঠিক না থাকে তাহলে গাড়ি রাস্তায় ভালোভাবে চলবে না। এমতাবস্থায় গাড়ি ভালোভাবে চালনায় ইঞ্জিনের উপর চাপ ফেলবে বেশি, আর খরচ হবে জ্বালানি। তাই জ্বালানির খরচ কমাতে টায়ারে বাতাসের প্রেশার ঠিক রাখুন।
৪। বুঝেশুনে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
এসির বাতাসে শরীর শীতল করার চেয়ে মাঝেমধ্যে জানালা খুলে একটু প্রাকৃতিক বাতাসে শীতলতা খুঁজতে পারেন। বিশেষ করে লং ড্রাইভ, সবুজে ঘেরা রাস্তা ধরে যখন যাত্রা হয়। এতে প্রকৃতির স্বাদ নেয়ার পাশাপাশি এয়ার কন্ডিশনার কম ব্যবহারের ফলে আপনার গাড়ির জ্বালানি খরচ কমে যাবে। পকেটেরও খেয়াল রাখা হবে কিছুটা সহজ।
৫। নিয়মিত সার্ভিসিং করান
গাড়িতে ভালো মাইলেজ পেতে হলে সঠিক সময়ে, নিয়মিত সার্ভিস করানো উচিত। সময় মতো গাড়ির সার্ভিসিং না হলে গাড়ির ইঞ্জিন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। যার ফলে গাড়ির মাইলেজও কমতে থাকে, ইঞ্জিনের উপর চাপ সৃষ্টি হতে থাকে আর খরচ বাড়তে থাকে জ্বালানির। তাই জ্বালানির খরচ কমাতে ও গাড়ি দীর্ঘদিন ভালো রাখতে নিয়মিত গাড়ির সার্ভিসিং করানো দরকার।
৬। ভেইকেল ট্র্যাকার ব্যবহার করুন
আপনার কোম্পানির গাড়িগুলোতে নিশ্চয়ই প্রতিদিন বিপুল পরিমান জ্বালানি ব্যবহার করা হয়! আর তার জন্য নিশ্চয়ই আপনার ব্যবসার একটি বড় অংকের খরচ চলে যায় গাড়ির জ্বালানির পেছনে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার লক্ষ্য থাকবে এই খরচ কমিয়ে আনা। এক্ষেত্রে গাড়িতে NTrack ভেইকেল ট্র্যাকার ব্যবহার করাই একজন বুদ্ধিমান ব্যবসায়ীর কাজ হবে। কারণ গাড়িতে NTrack ভেইকেল ট্র্যাকার ব্যবহার করলে যেহেতু গাড়ি সবসময় মনিটরিং করতে পারবেন তাই গাড়ির অযথা এবং অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে জ্বালানি খরচ কমানো যাবে। ট্রিপ রিপোর্ট, জ্বালানি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আপনি সঠিক ট্রিপ প্ল্যান করতে পারবেন।
এছাড়া ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস ব্যবহার করলে ডিসটেন্স রিপোর্ট, হল্ট রিপোর্ট, ফুয়েল কনজাম্পশন রিপোর্ট, স্পীড এনালাইসিস রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গাড়ির এবং ড্রাইভারের পার্ফমেন্স সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। ফলে গাড়ির জ্বালানি খরচ কমিয়ে আনতে পারবেন খুব সহজে। ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকগণ একইভাবে তাদের গাড়ি মনিটরিং করে জ্বালানি খরচের লাগাম টেনে ধরতে পারেন। আপনার ড্রাইভার কতৃক গাড়ির অনুমোদিত ব্যবহার রোধ করতে পারবেন। সারাদিন গাড়ি কতটুকু চলেছে তার ডিস্টেন্স রিপোর্ট এর সাথে ফুয়েল কনজাম্পশন রিপোর্ট থেকে জ্বালানি খরচ কমানোর প্ল্যান করতে পারবেন সহজেই।
নিয়মিত কিছু সতর্কতা অবলম্বনে কমিয়ে আনা সম্ভব জ্বালানির বাড়তি খরচ। আশা করি এই কার্যকরী উপায়গুলো আপনার গাড়ির জ্বালানির খরচ এবার অনেকটাই কমিয়ে আনবে। এনট্র্যাকের সাথেই থাকুন।