জিপিএস ট্র্যাকার, বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি ডিভাইস। ইতোমধ্যে আপনিও হয়তো জিপিএস ট্র্যাকার সম্পর্কে শুনেছেন। গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম এই জিপিএস ট্র্যাকার। গাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে কম-বেশি সবারই দুশ্চিন্তা থাকে। গাড়িটি কোথায় আছে, গাড়িটির অপব্যবহার হচ্ছে কিনা, গাড়িটি ওভার স্পিডে চলছে কিনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন তথ্য জানতে পারবেন জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে। পাশাপাশি ট্রিপ হিস্ট্রি, ডিস্টেন্স রিপোর্ট, ফুয়েল রিপোর্ট সহ অসংখ্য জরুরী বিষয় একই সাথে মনিটরিং করতে পারবেন।
তবে বিস্তারিত না জানায়, জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করবেন কি না তা নিয়ে এখনও অনেকে সন্দিহান। আজকের লেখায় থাকছে জিপিএস ট্র্যাকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচারের বিস্তারিত তথ্য, যা আপনাকে এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করবে।
জেনে নিন, কেনো গাড়িতে ব্যবহার করবেন জিপিএস ট্র্যাকার।
লাইভ ট্র্যাকিং
জিপিএস ট্র্যাকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ফিচারটি হচ্ছে লাইভ ট্র্যাকিং সুবিধা। এই ফিচারটির মাধ্যমে গাড়ির বর্তমান অবস্থান লাইভ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এই ফিচারটি গাড়ির গতিবিধি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে থাকে। জিপিএস ট্র্যাকারের আওতায় থাকা গাড়িটি কখন-কোথায় আছে, কোন রুটে চলছে, কত স্পিডে চলছে- এই বিষয়গুলো লাইভ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন যেকোনো জায়গায় বসে।
অনেক সময় ড্রাইভাররা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বা সময় বাঁচাতে সহজ রুট খুঁজে থাকে, যা গাড়ির জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে। লাইভ ট্র্যাকিং-এর মাধ্যমে আপনি সবসময় জানতে পারবেন গাড়িটি কোন রুটে চলছে। কোনো রুট নিরাপদ না মনে হলে তাৎক্ষণিকভাবে ড্রাইভারের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। যা আপনাকে ভবিষ্যতে অনেক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে, রাখবে দুশ্চিন্তামুক্ত।
ওভার স্পিড এলার্ট
জিপিএস ট্র্যাকারের এই ফিচারটি দিচ্ছে গাড়িতে নির্দিষ্ট স্পিড সেট করার ও পরবর্তীতে গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা। অনেক সময় ড্রাইভাররা গতিসীমা বাড়িয়ে গাড়ি চালায়, যা বেশ বিপদজনক। এতে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা, গাড়ির বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ব্যাপারটি যেকোনো গাড়ির মালিকের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার।
আপনার গাড়িটিকে সর্বোচ্চ কত স্পিডে চলতে দিতে চান তা সেট করে রাখতে পারবেন জিপিএস ট্র্যাকারের ওভার স্পিড এলার্ট ফিচারের মাধ্যমে। ড্রাইভার যদি পূর্বে সেট করা ওই নির্দিষ্ট স্পিডের চেয়ে বেশি স্পিডে গাড়ি চালায়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে জিপিএস ট্র্যাকারে সেট করা নির্দিষ্ট মেইল এড্রেসে নোটিফিকেশন চলে আসবে। ফলে ওই নির্দিষ্ট সময়েই আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। যা আপনার গাড়ির বড় ধরণের ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচাবে, কমাবে আপনার বাড়তি দুশ্চিন্তা।
ইঞ্জিন লক/আনলক
গাড়ির ইঞ্জিন লক/আনলক করতে পারা জিপিএস ট্র্যাকারের আরেকটি স্মার্ট ফিচার। অনেক সময় সামান্য বেখেয়ালে আপনার গাড়ি চুরি হতে পারে। যা ব্যক্তিগতভাবে বা ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে আপনার জন্য বিরাট ক্ষতি হয়ে দাঁড়াবে। এই ঝামেলা ও দুশ্চিন্তা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারবেন জিপিএস ট্র্যাকারের ইঞ্জিন লক/আনলক ফিচারের মাধ্যমে।
জিপিএস ট্র্যাকারের ইঞ্জিন লক/আনলক ফিচারের মাধ্যমে আপনার গাড়ি সম্পূর্ণভাবে আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক করলে আপনার পারমিশন ছাড়া যেকেউ চাইলেই আপনার গাড়ির ইঞ্জিন চালু করতে পারবে না। শুধুমাত্র আপনি নিজে আনলক করলেই গাড়ির ইঞ্জিন চালু হবে। যা আপনার গাড়িকে চুরি হওয়া থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখবে।
জিওফেন্স
জিওফেন্স মূলত লোকেশন-বেইজড সার্ভিস। এই ফিচারটির মাধ্যমে আপনি আপনার গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট কিছু লোকেশনের ভার্চুয়াল প্যারামিটার সেট করতে পারবেন। যেই লোকেশনে আপনার গাড়ি প্রবেশ করলে ও লোকেশন থেকে গাড়ি বের হলে আপনাকে নিয়মিত নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
জিপিএস ট্র্যাকারের চমৎকার এই ফিচারটির মাধ্যমে আপনার গাড়ির জন্য গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনের প্যারামিটার সেট করে, নিয়মিত নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আপডেট পেয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন পুরোপুরি।
ট্রিপ হিস্ট্রি
শুধুমাত্র গাড়িটি কোথায় আছে, এই তথ্যই নয়, জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন গাড়ির ট্রিপ হিস্ট্রিও। আপনার গাড়ি কতগুলো ট্রিপ নিয়েছে, কোথায় কোথায় গিয়েছে এই তথ্যগুলো আপনার ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই দরকার হয়। এই তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য অনেক মানুষ রাখা, খাতা-কলমে হিসেব করা বেশ সময় সাপেক্ষ ও ঝামেলার হতে পারে। তবে জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে বেশ সহজেই করতে পারবেন কাজটি।
জিপিএস ট্র্যাকারের ট্রিপ হিস্ট্রি ফিচারের মাধ্যমে এক বা একাধিক গাড়ির নির্দিষ্ট সময়ের ট্রিপের হিস্ট্রি পেয়ে যাবেন অল্প সময়ের মধ্যে। আর গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যগুলো রিপোর্ট আকারে পাওয়ায় আপনার সময় বাঁচবে, কাজ সহজ হবে ও কমবে বাড়তি শ্রম।
ডিস্টেন্স রিপোর্ট
জিপিএস ট্র্যাকারের আরো একটি স্মার্ট ফিচার ডিস্টেন্স রিপোর্ট। এই ফিচারটি আপনাকে বা আপনার কোম্পানিকে আরো স্মার্টভাবে কাজ করতে সহযোগিতা করবে। এই রিপোর্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন নির্দিষ্ট সময়ে আপনার গাড়িটি কত কিলোমিটার চলেছে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোন ঘন্টায়/ দিনে/সপ্তাহে/মাসে গাড়িটি কত কিলোমিটার চলেছে তা সহজেই জানতে পারবেন। ফলে আপনার গাড়ির মাইলেজ পার্ফমেন্স সম্পর্কে আপনি থাকবেন ওয়াকিবহাল।
ফুয়েল রিপোর্ট
দিন দিন ফুয়েল খরচ বেড়েই চলেছে, যা গাড়ির মালিকদের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার একটি বিষয়। ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি আপনি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলেও, নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আপনার গাড়ির পেছনে ফুয়েলের ব্যয়। জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করলে পাবেন গাড়ির ফুয়েল কনজাম্পশন রিপোর্ট। ট্রিপ রিপোর্ট, জ্বালানি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আপনি সঠিক ট্রিপ প্ল্যান করতে পারবেন।
মেইন পাওয়ার ফেইল এলার্ট
আপনার গাড়ির ব্যাটারী অথবা জিপিএস ট্র্যাকার ডিভাইসটি যদি কেউ গাড়ী থেকে খুলে ফেলে তবে আপনার ফোনে মেইন পাওয়ার ফেইল এলার্ট এসএমএস ও ইমেইল-এর মাধ্যমে চলে আসবে। যা থেকে আপনি তাৎক্ষণিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যটি জেনে যাবেন।
আপনার গাড়ির নিরাপত্তায় জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করতে চাইলে NTrack হতে পারে সেরা অপশন। NTrack বাংলাদেশের প্রথম ট্র্যাকিং সার্ভিস। NTrack-এর রয়েছে ২৪/৭ সার্বক্ষণিক সাপোর্ট সেন্টার, সারা বাংলাদেশ জুড়ে সার্ভিস সেন্টার এবং নানা রকম প্রিমিয়াম ফিচার সহ NTrack সার্ভিস দিচ্ছে বাংলাদেশের দেড় লক্ষ মানুষকে। গাড়ি নিয়ে একইসাথে ঝামেলামুক্ত ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে আপনিও ব্যবহার করতে পারেন NTrack।